আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সম্প্রতি বিদায় নিয়ে গেলো পবিত্র ঈদুল আজহা। ধীরে ধীরে খুলতে শুরু হলো সরকারি-বেসরকারি সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সপ্তাহ খানেকের বন্ধ কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু হয়েছে সব রকমের প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কার্যক্রম। পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে কলে-কারখানা গুলোতেও। তবে ঈদের সপ্তাহ পরেও মিনি কক্সবাজার হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রামের জনপ্রিয় আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যটকের কমতি নেই। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো একটা দিন কাটাতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা এসে ভীড় জমিয়েছে পারকি সৈকতে। এদিকে পর্যটকদের পদচারণায় খুশি সৈকতের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। পর্যটকদের উল্লাসে মুখরিত রয়েছে দর্শনীয় স্থানগুলো। কেউ সমুদ্রের ঢেউ অবলোকন আবার কেউ সমুদ্রের লোনা পানিতে গা ভাসিয়ে গোসল করছে। কেউ ঘোড়া দৌড়াচ্ছে, কেউ ঘুরে ঘুরে সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করছে, অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে মেতেছে ফুটবলে, আবার কেউ ব্যস্ত সেলফিতে। সমস্ত পারকি বীচজুড়ে এই সমস্ত দৃশ্যই চোখে পড়ে। তবে প্রকাশ্যে জুয়ার আসরও দেখা যায় সৈকতের বিভিন্ন জায়গায়।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা এডভোকেট সাইনুর নাহার জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে এটা আরোও সুন্দর বেশি। নিরিবিলি পরিবেশে মন জুড়িয়ে যায়। এই সৈকতের সৌন্দর্যের কথা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক।
নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে হাবিবা নুর নামের আরেক দর্শনার্থী বলেন, পারকি সৈকতে এসে কুল-কিনারাহীণ বঙ্গোপসাগরের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে থাকার অনুভূতিটা অন্যরকম। উত্তপ্তবালি চরে খালি পায়ে হেঁটে সমুদ্রের শীতল পানিতে পা ভেজানোর মতো ভালো লাগার অনুভূতি আর হয় না। তা-ই সুযোগ পেলেই পারকি সৈকতে আসা হয়।
মোহাম্মদ আমিন নামের এক ঘোড়সওয়ারী জানান, বীচের এক প্রান্থ থেকে অন্য প্রান্থে ঘোড়াতে সওয়ার হওয়া প্রতিজন ১২০ টাকা করে। এইভাবে ঘোড়া দিয়ে তিনি দৈনন্দিন ২-৩ হাজার টাকা আয় করে।
পলাশ নামের এক হাওয়াই-মিঠাই বিক্রিওয়ালা জানায়, আমার বাড়ি ময়মনসিংহ তবে প্রতি ঈদের মৌসুমে আমি এখানে এসে মিঠাই বিক্রি করি। এই মৌসুমে শুধু মিঠাই বিক্রি করে দৈনন্দিন ২হাজার টাকা আয় করি।
পারকি বীচ কমিটির সদস্য স্থানীয় চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ্ বলেন, বীচের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিভিন্ন পয়েন্টে গ্রামপুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ যাতে বীচে উশৃংখলতা করতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক কড়া নজরদারি করা হচ্ছে। তাছাড়া বীচে আসা যানবাহনকে যাতে যানজটের কবলে পড়তে না হয় সেজন্য মাঠে থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বীচের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কর্ণফুলী জোনের এসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি) আরিফ হোসাইন বলেন, আমরা বীচের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে সব সময় তৎপর থাকি। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বীচে বাইক নামায় তাদের জরিমানাসহ গাড়ি জব্দ করা হচ্ছে। এছাড়াও পর্যটকদের যেকোনো অভিযোগ পেলে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ যেসমস্ত ফটোগ্রাফার এবং দোকানী পর্যটকদের হয়রানি করতেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেও এই বিষয়ে নজরদারি রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।