বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল -|- ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
dailyamadernatunsangbad.com - news@dailyamadernatunsangbad.com - www.facebook.com/dailyamadernatunsangbad/

ইয়াংছায় এক টমটম চালককে মেরে রক্তাক্ত করলো ০৪ যুবক!

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মুহাম্মদ এমরান
বান্দরবান
ইয়াংছায় এক টমটম চালককে মেরে রক্তাক্ত করলো চার যুবক।
লামা উপজেলার আওতাধীন ০৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২৮৪ নং ইয়াংছা মৌজার ০৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, মোঃ শাহাজাহান’কে মেরে রক্তাক্ত করলো ইয়াংছার চার জন যুবক।

মোঃ শাহাজাহান বলেন, আমি একজন টমটম চালক, টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি।আমার তিনজন ছেলে-মেয়ে আছে। আজ দুপুরে ইয়াংছা বাজার থেকে কয়েকজন যাত্রী নিয়ে কাঁঠাল ছড়া,ত্রিপুরা পাড়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিচ্ছিলাম। এমন সময় মাছ ব্যবসায়ী মিজান এসে আমাকে গতিরোধ করে গাড়ি নিয়ে কাঁঠালছড়া ত্রিপুরা পাড়া না যায়তে বলে। আমি যখন কেন যায়তে পারবোনা জিজ্ঞেস করি তখন অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। একপর্যায়ে সজোরে থাপ্পড় দিয়ে আমার গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয়। আমার গাড়ির চাবি ফেরত চেয়ে ব্যবসায়ী মিজানের নিকট বারবার অনুরোধ করলেও উল্টো চড় থাপ্পড় মেরে হুমকি দিতে থাকে। এরসাথে সাথেই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন মোটরসাইকেল চালক, মোঃ মুবিন,  মোঃ নেজাম ও মোঃ বক্কর এসে আমাকে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারে। বাজার থেকে কয়েকজন লোক এসে আমাকে উদ্ধার করে ইয়াংছা ক্যাম্পের পাশে আমার মা-স্ত্রীর সামনে নিয়ে যায়। ওরা সিএনজি একটা ভাড়া করে আমাকে লামা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে আমার অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি ভর্তি করানোর জন্য বলেন ডাক্তার।
প্রতিবেদক লামা সরকারি হাসপাতালে গেলে, আহত টমটম চালক এসব বিষয় বলেন।

অপর দিকে মোঃ মিজানের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিবেদকে জানান, কাঁঠালছড়া ত্রিপুরা পাড়া যাতায়াতের রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে আমি শাহাজানকে যাত্রী নিয়ে ঐখানে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করি, এক পর্যায়ে আমি শাহাজাহানের গাড়ির চাবি নিয়ে আমার দোকানে চলে যায়।  হঠাৎ  কয়েকজন এসে শাহাজাহানকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।  আমি এর সুস্থ বিচার চাই।

মোঃ শাহাজাহানের স্ত্রী হোসনেআরা বেগম বলেন, আমার স্বামী গরু কিনতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে বের হয়। এর কিছুক্ষন পরে আমি শুনতে পায় ইয়াংছা বাজারে কয়েকজন লোক মিলে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করে। আমার স্বামীকে নিয়ে আমরা লামা সরকারি হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে ভর্তি করানোর নির্দেশ দেন। আমরা তাকে ভর্তি করানোর পরে জানতে পারি গরু কেনার জন্য যে টাকা গুলো নিয়ে বের হয়ছিলো সমস্ত টাকা (৪০০০০) গুলো নিয়ে নেয়। আমার স্বামীর অবস্থা আশংকা জনক। আমরা চকরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিন্তা করতেছি। এবং মামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

অপরদিকে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে প্রত্যক্ষদোষীদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, কাঁঠাল ছড়া ত্রিপুরা পাড়া যাতায়াতের রাস্তা খুবই খারাপ হওয়ার কারণে টমটম নিয়ে ঐ দিকে না যায়তে নিষেধ করতে গিয়ে একপর্যায়ে কথোপকথনের মধ্যে মোঃ মিজান টমটম চালকের গালে থাপ্পড় মারে। সাথে সাথেই মুমিন, বক্কর, নেজামসহ আরো কয়েকজন এসে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারে টমটম চালককে। একপর্যায়ে মোঃ মিজান বাঁশ নিয়ে মারতে আসলে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বেলালসহ কয়েকজন মিলে বাঁশটা নিয়ে নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, ৫-৬ জন যুবক মিলে একজন নিরীহ টমটম চালকের উপর এই ভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি। যদি টমটম চলাচলে কোন সমস্যা হয় তাহলে তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বললে তাও না মানলে প্রশাসনকে অথবা মোটরসাইকেল সিএনজি সভাপতিকে জানালেও পারতো। কিন্তু একজন মানুষের উপর এইভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি।

এবিষয়ে মোটরসাইকেল সমিতির সভাপতি মোঃ ফরিদের সাথে কথা বললে প্রতিবেদককে জানান, মোটরসাইকেল চালকরা একজন অসহায় মানুষকে মারধর করেছে এটি অপরাধ। কারো গায়ে হাত দেওয়ার অধিকার আমি তাদেরকে দিনাই। সুস্থ তদন্ত পূর্বক আমি এর বিচারের দাবী জানাচ্ছি।
অপরদিকে ইয়াংছা সিএনজি সভাপতি মোঃ নেজাম(কোম্পানি) সাথে কথা বললে জানান, মোঃ মিজান অনেক দিন যাবত আমার সমিতির কোন কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত নেই। তার উপর অভিযোগ পাওয়ার ভিত্তিতে আমি তাকে আমার সমিতির কমিটি থেকে বহিষ্কার করেছি। সুস্থ তদন্ত পূর্বক বিচারের দাবী জানাচ্ছি।