চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,
সিএমপি’র আকবরশাহ্ থানার অভিযানে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্রের R15M মোটরসাইকেল, আইফোন ও নগদ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় লুণ্ঠিত মোটরসাইকেল, ৩টি আইফোন, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত টিপছোরা উদ্ধার, গ্রেফতার ৪।
বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্র রাহিক আলম আরিয়ান ও তার বন্ধু মোহাম্মদ রিদুয়ান হোসেন হৃদয় থানায় হাজির হয়ে জানান, তিনি ও তার বন্ধু হৃদয় মোটরসাইকেলযোগে পতেঙ্গা বিচ এলাকায় বেড়ানোর উদ্দেশ্যে গত ৩০/০৪/২০২৪ খ্রি. সন্ধ্যা আনুমানিক ০৫:৩০ ঘটিকার সময় নিজ বাসা হতে রওনা করেন। পথিমধ্যে গত ৩০/০৪/২০২৪ খ্রি. সন্ধ্যা আনুমানিক ০৬:০২ ঘটিকার সময় আকবর শাহ্ থানাধীন বায়েজিদ লিংক রোডস্থ ৪নং ব্রিজের পূর্ব পাশের জোড়া বৈদ্যুতিক খুঁটির সামনে ফুটপাতের উপর অবস্থানকালে (অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রাকৃতিক বাতাস নেওয়ার সময়) অজ্ঞাতনামা ৪ জন বিবাদী হাতে ছোরা নিয়ে হঠাৎ তাদের সামনে এসে ছোরা দ্বারা ভয় দেখিয়ে তাদের কাছে যা কিছু আছে দিয়ে দিতে বলে। তখন তারা তাদের নিকট থাকা মালামাল দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে বিবাদীরা উভয়কে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা ১ জন বিবাদী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্র আরিয়ানের গলায় ছোরা ধরে মোটরসাইকেলের চাবি, গাড়ির ডকুমেন্টসহ একটি ইয়ামাহা R15M মোটরসাইকেল, যার মূল্য ৭,২৫,০০০/- (সাত লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা) ও অপর একজন বিবাদী তার পরিহিত প্যান্টের সামনের পকেটে থাকা ০১টি Iphone 13 Pro Max মোবাইল সেট এবং আরও একজন বিবাদী তার বন্ধু মোহাম্মদ রিদুয়ান হোসেন হৃদয়ের নিকট থাকা একটি Iphone 13 Pro মোবাইল সেট ও একটি Iphone 11 মোবাইল সেট এবং অপর একজন বিবাদী তার বন্ধুর পরিহিত প্যান্টের পকেটে থাকা একটি মানিব্যাগসহ নগদ ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার টাকা), ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ প্রায় দশ লক্ষ টাকার মালামাল জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় বাদী রাহিক আলম আরিয়ান অজ্ঞাতনামা চারজন বিবাদীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে আকবরশাহ্ থানায় মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজু পরবর্তী সিএমপি’র পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব নিহাদ আদনান তাইয়ান মহোদয়ের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় এডিসি জনাব স্পিনা রানী প্রামাণিক ও পাহাড়তলী জোনের এসি জনাব মোঃ মঈনুর রহমানের তত্ত্বাবধানে আকবারশাহ্ থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম রব্বানীর নেতৃত্বে আকবরশাহ্ থানার এসআই (নি.) এইচ এম এরশাদ উল্লাহ, এইচ এম ওয়াহিদুল্লাহ, এসআই দীপন পাল, এএসআই এনামুল হক, এএসআই লাল মিয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ মামলার বাদীকে আকবরশাহ্ থানা এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারীদের ছবি প্রদর্শন করে আসামিদের শনাক্তপূর্বক বিশ্বস্তসূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলার বাদীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত তদন্তেপ্রাপ্ত আসামি মোঃ রাকিবুল হাসান জাহিদ প্রকাশ পিচ্ছি জাহিদ (২৪), আব্দুল হালিম রিংকু (২৩), মোঃ জিহাদ হোসেন প্রঃ বাক্কা (২০)-দেরকে আকবরশাহ্ থানাধীন শাপলা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারপরবর্তী দেহ তল্লাশি করে আসামি মোঃ রাকিবুল হাসান জাহিদ প্রকাশ পিচ্ছি জাহিদের হেফাজত থেকে লুণ্ঠিত একটি Iphone 13 Pro Max মোবাইল সেট, আসামি আব্দুল হালিম রিংকুর হেফাজত থেকে লুণ্ঠিত একটি Iphone 13 Pro মোবাইল সেট, আসামি মোঃ জিহাদ হোসেন প্রঃ বাক্কার হেফাজত থেকে লুন্ঠিত একটি Iphone 11 মোবাইল সেট উদ্ধারপূর্বক সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ০১/৫/২০২৪ খ্রি. (৩০/০৪/২৪ খ্রি. দিবাগত) রাত ০২.৩০ ঘটিকায় জব্দতালিকা মূলে জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামি রাকিবুল হাসান জাহিদ, আব্দুল হালিম ও জিহাদ হোসেনদের দেখানো এবং শনাক্তমতে আকবরশাহ্ থানাধীন নিউ মুনসুরাবাদ এলাকা থেকে আসামি সাব্বির হোসেন সৈকতকে গ্রেফতারপূর্বক তার হেফাজত থেকে ছিনতাইকৃত মোটরসাইকেলের চাবি, গাড়ির ডকুমেন্ট ও ছিনতাইকৃত ইয়ামাহা R15M মোটরসাইকেল এবং ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি টিপছোরা উদ্ধারপূর্বক ০১/৫/২০২৪ খ্রি. ভোর ০৪.৩০ ঘটিকায় জব্দতালিকা মূলে জব্দ করা হয়। আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। আসামিরা দীর্ঘদিন যাবত বায়েজিদ লিংক রোড এলাকায় পথচারী ও পর্যটকদের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন মালামাল ছিনতাই করে আসছিল মর্মে জানা যায়। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আসামিদেরকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।