সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল -|- ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
dailyamadernatunsangbad.com - news@dailyamadernatunsangbad.com - www.facebook.com/dailyamadernatunsangbad/

মেহেদীর রঙ না মৃছতেই নববধুর রহস্য জনক মৃত্যু ! ঘটনা নিয়ে ধোয়াশা সৃষ্টি।

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জান্নাতুল ফেরদৌস (১৯) নামে এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পর স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে। নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস জেলার সদর উপজেলার ৭ নম্বর চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের মহজমপুর এলাকার আ. লতিফের মেয়ে। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) উপজেলার কলতাপাড়া এলাকায় স্বামী’ র বাড়িতে নিজ ঘরে থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গৌরীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মালেক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে কলতাপাড়া এলাকার আ. লতিফের ছেলে বিপুল মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লেকজনের সাথে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে কলহ লেগেই থাকতো। ঘটনার দিন সকালে স্বামী বিপুল মিয়াকে ডিম ভেঁজে ভাত খেতে দেয়। খাওয়ার সময় ডিমে লবণ বেশি হয়েছে নিয়ে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে বিপুল মিয়া স্বজোরে জান্নাতুল ফেরদৌসের চোঁয়ালে( চাপায়) থাপ্পর মারেন। পরে জান্নাতুল ফেরদৌস নিজ ঘরের আড়ার সাথে উড়না পেচিয়ে ফাঁসিতে ঝুঁলে আত্মহত্যা করে। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে মরদেহ উদ্ধার উঠানে নিয়ে আসে। এমতাবস্থায় স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। 

জান্নাতুল ফেরদৌসের বাবা আঃ লতিফ জানায়, বিপুল মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন আমার মেয়ে কে নির্যাতন করে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও তার পিতা-মাতা এবং পরিবারের অন্যান্য লোক আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে মানসিক অমানবিক, অত্যাচার নির্যাতনের নিপীড়ন চালায়।

এমনকি বারবার যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে শুধু তাই নয় গত দুই মাসের মধ্যে মেয়ে আমার বাড়িতে আসতে চাইলে আসতে দেয় নাই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উক্ত ঘটনা প্রকৃত হত্যাকান্ড ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিপুল মিয়ার পরিবার ও কলতাপাড়ার এক বিএনপি’র নেতা মোটা অংকের টাকার প্রলোভনে উক্ত হত্যাকান্ডের ভিকটিম থেকে মামলা না নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে যার ফলে আমি এবং স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিরা থানায় গিয়ে হত্যা মামলা দিতে চাইলে এবং তদন্ত এবং প্রশাসন কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে বললে মামলা নেয়নি। আমার মেয়ের হাতের মেহেদির রঙ এখনো মুছেনি, ওর শরীরের রঙ ও বিবর্ণ হয়নি এর আগেই লাশ হয়ে গেলো আমার মেয়েটি। আমি আমার মেয়ের হত্যাকান্ডের বিচার চাই।

নিহতের প্রতিবেশি চাচা ফারুক মিয়া বলেন, কিছু দিন আগে জান্নাতুল ফেসদৌসের বিয়ে হয়। তার স্বামী মাদকাসক্ত। ঘটনার দিন তুচ্ছ ঘটনার জেরে চাপায় থাপ্পড় দেয়। এতে ঘটনাস্খলেই সে মারা যায়। পরে স্বামীসহ তার বাড়ির লোকজন গলায় উড়না পেচিয়ে ঝুঁলিয়ে রাখে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। নিহতের চাপায় থাপ্পরের চিহ্ন রয়েছে। আমরা এই ঘটনায় হত্যা মামলার আবেদন করবো। থানায় মামলা না নিলে আদালতে মামলা করবো।

এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল মালেক বলেন, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। গলায় ফাঁসির চিহ্নসহ চোঁয়ালে (চাপায়) থাপ্পরের আঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।