নিজস্ব প্রতিবেদক:- নিরেন দাস
জয়পুরহাটের কালাইয়ে মহান বিজয় দিবস ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী নাজমুল হোসেন ফকিরের অনুষ্ঠানে প্রধান অতথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও পুনট ইউনিয় পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো.ইব্রাহিম হোসেন ফকির। এমন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী থাকায় উপজেলার নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার সন্ধায় মাত্রাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন যুব সমাজের এবং কুলি শ্রমিক বৃন্দের সার্বিক তত্তাবধানে মহান বিজয় দিবস ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতকি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আয়োজনের সঞ্চালক নাজমুল ছিলেন মাত্রাই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা। নাজমুল হোসেন ফকিরের বিরোদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.মিনফুজুর রহমান মিলনের ছত্রছায়াই জলমহাল দখল, পুকুর, বাড়িঘর দখল, চুরি, মাদক, লুটপাট, চাঁদাবাজি, অপহরণ, নিরীহ মানুষদের মারধর ও মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। নাজমুলের বিরোদ্ধে উঠা সকল অভিযোগগুলো পাত্তা না দিয়ে তার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করায় বিএনপির উপজেলার আহবায়ক ও পুনট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম হোসেন ফকিরের উপর অসন্তুষ্ট বিএনপির নেতা ও কর্মীরা।
উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ৫ আগস্ট সকাল ৯ টা পর্যন্ত বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর চরাও ছিল আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী নাজমুল হোসেন ফকির। বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট ডাকাতি করে হুইপ ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিল নাজমুল।
মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান জলি জানান, বিগত সরকারের আমলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও হুইপের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থতি থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছে নাজমুল। মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপিতে চরম অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড নেতাদের দৌরাত্য বেরেছে। বর্তমান নাজমুল হোসেন ফকিরকে উপজেলা বিএনপির আহবায়কের মদদে বিএনপির মধ্যে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা চালাচ্ছে ।
মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির নেতা বলেন, বিএনপির সুদিনের সম্ভাবনায় এখন অনেক হাইব্রিড নেতা জুটতে শুরু করেছে, আওয়ামী লীগের অনেক সুবিধাভোগী খোলস পরিবর্তন করে বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হচ্ছে। হাইব্রিড নেতাদের কারণে বর্তমান মাত্রাই ইউনিয়ন মূল বিএনপি নেতারা অনেক বীপদে রয়েছে। হাইব্রিড নেতা নাজমুল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বেপারীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলো। কালাই উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো.ইব্রাহিম হোসেন ফকির এখন বিএনপির সুনামকে নষ্ঠ নিয়ে মহা ব্যস্ত রয়েছে।
মাত্রাই বাজারের প্রবীণ আওয়ামী লীগ কর্মী মোসলেম উদ্দিন ও মোন্না পাড়ার আমজাদ হোসেন সহ অনেকেই জানান, নাজমুল আগস্টের ৫ তারিখ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ করছে। এখন শুনছে আবার ইব্রাহিমের সাথে বিএনপির রাজনীতি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনুষ্ঠানরে আয়োজক এক কুলি শ্রমিক বলেন, আমাদের কুলি সমিতির পক্ষে এতবড় আয়োজন করা সম্ভব নয়। আমাদের নাম দিয়ে নাজমুল এই অনুষ্ঠান আয়োজন করছেন।
এই বিষয়ে নাজমুল হোসেন ফকির জানান, আমি মাত্রাই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানকে প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে বাধ্য হয়েছি। তবে আমার বিরোদ্ধে আনিত অন্যান্য অভিযোগগুলোর কোন সত্যতা নাই।
কালাই উপজেলার বিএনপির আহবায়ক মো. ইব্রাহিম হোসেন ফকির জানান, নাজমুল হোসেন ফকিরের বাবা মাত্রাই ইউনিয়নের বিএনপির প্রতষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। অনুষ্ঠান নাজমুলের সঞ্চালনায় থাকলেও আমি মুলত গিয়েছি মাত্রাই ইউনিয়ন যুব সমাজের দাওয়াতে।