মাগুরা জেলা প্রতিনিধি,
মোঃ সাকিব খান,
মাগুরা সদর উপজেলার সত্যিপুর গ্রাম এখন অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এ গ্রামের ঠাকুর বাড়ি এলাকায় কয়েকটি গাছে গত এক বছর ধরে অবস্থান করছে শতশত অতিথি পাখি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সত্যিপুর গ্রামে ঠাকুরবাড়ি এলাকার বড়-বড় গাছগুলোতে বসেছে অতিথি পাখির দল। বিশেষ করে বিকেল হলেই বিভিন্ন এলাকার মাঠ থেকে অতিথি পাখিরা এসব গছের শাখায় অবস্থান নিচ্ছে। যা হয়ে উঠছে অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন।
সত্যিপুর গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম জানান,গত ৭ বছর ধরে পাখিগুলো তাদের গ্রামে আসতে শুরু করে। তারা ঠাকুর বাড়ি এলাকার বড় গাছগুলোতে অবস্থান করছে। প্রথম দিকে পাখিগুলো শীত মৌসুমে এসে চলে যেত। কিন্তু গত বছর থেকে এগুলো ১২ মাস ধরে সত্যিপুর গ্রামে অবস্থান করছে। এলাকাবাসী পাখিগুলো সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
একই গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, তারা এলাকায় পাখি নিধন নিষিদ্ধ করেছেন। এ কারণে অতিথি পাখিগুলো খুব নিরাপদে এ গ্রামে অবস্থান করতে পারছে। সারা দিন তারা বিভিন্ন মাঠে খাবার গ্রহণের পর বিকেলে আবার নির্দিষ্ট গাছে ফিরে আসে। এগুলো দেখতে প্রতিদিন বিকালে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করে।
সত্যিপুর গ্রামের কলেজ ছাত্র প্রবীর চক্রবর্তী জানান,পাখিগুলো এখন এলাকার পরিবেশ ও সৌন্দর্যকে সমৃদ্ধ করেছে। এটা এখন সত্যিপুর গ্রামের সম্পদ। যে কারণে সবাই এগুলো সংরক্ষণে সমানভাবে উদ্যোগী হয়েছে।
ছনপুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, আমরা এ এলাকার পাখির কথা শুনেছি। এখন এগুলো দেখতে এসে খুব ভাল লাগছে। আমার জানামতে এগুলো স্থানীয়ভাবে শামুকভাঙ্গা পাখি হিসেবে পরিচিত। পাখির সংখ্যা কমপক্ষে ৫ শতাধিক হবে। এলাকার মানুষ এগুলো সংরক্ষণে ভূমিকা রাখায় দীর্ঘদিন ধরে এখানে তারা অবস্থান করছে।
স্কুলছাত্র জাহিদ হোসেন জানায়, এতোদিন তারা বইয়ে এসব পাখির কথা জেনেছি। এখন নিজ গ্রামে পাখিগুলো দেখে তারা খুশি। এগুলো তারা কাউকে মারতে দেয় না।
সত্যিপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান বলেন, পাখিগুলো ঝড়বৃষ্টির সময় খুব সমস্যায় পড়ে। এ কারণে প্রাণি সম্পদ বিভাগের উচিত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাদিউজ্জামান বলেন, আমরা সত্যিপুর গ্রামের অতিথি পাখির সংরক্ষণে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছি। শুধু সত্যিপুর নয় পুরো জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাখি নিধনের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমরা প্রচারপত্র ও বিভিন্ন ধরনের ব্যানার সরবরাহ করেছি।