বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল -|- ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
dailyamadernatunsangbad.com - news@dailyamadernatunsangbad.com - www.facebook.com/dailyamadernatunsangbad/

ক্ষেতলালে পূর্ব শত্রুতার জেরে শাশুড়ি দেবরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা এলাকাবাসীর ক্ষোভ!

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৩

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ- নিরেন দাস

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের ধনতলা গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানীর অভিযোগে। এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। এবিষয়ে থানা পুলিশকে সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা। গত (৫ জানুয়ারী )২০২৩’ সম্পা বানু বাদী হয়ে জয়পুরহাট বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে আইনের ধারা ১৪৭/ ৪৪৭/৩২৪/ ৩৮০/৩৫৪/৩০৭/৩১২/৩১৫/৩৪ দঃ বিঃ অভিযোগে মামলা দায়ের করছেন।

মামলার আসামীরা হলেন,উপজেলার চৌমহনি বাজারের ধনতলা গ্রামের মৃত্য আকা মদ্দিনের ছেলে নজরুল, নজরুলের স্ত্রী তহমিনা, রবিউলের স্ত্রী সুলতানা ও রাবেয়া বেওয়া৷ উভয়ের সাং চৌমনি বাজার ধনতলা৷

সম্পার করা মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তির জন্য চৌমনি বাজার সংলগ্ন ধনতলা গ্রামেের লোকজন গণ স্বাক্ষর দিয়েছেন। ইতি পূর্বে বিগত ২০১০ সালে জয়পুরহাট বিজ্ঞ আদালতে ১২ বছর পূর্বে একই আইনে বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করেন সম্পা বানুর স্বামী মো.ফিতা মিয়া৷ সেই মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিলো৷

এবিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য মো.খলিল আকন্দ বলেন, মো.নজুরুল আমার প্রতিবেশী। অত্যন্ত ভালো ও একজন চরিত্রবান মানুষ। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সাজানো মিথ্যা হত্যা চেষ্টা ছিনতাই মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে। আমি উক্ত মিথ্যা মামলার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যদি সম্পা আঘাত পেয়ে থাকতো তবে স্থানীয় ক্ষেতলাল সরকারি হাসপাতাল ছেড়ে পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার দুপচাচিয়া উপজেলায় গিয়ে চিকিৎসা নিলো কেনো নিশ্চয় এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এতে অসৎ উদ্দেশ্য৷

স্থানীয় ধনতলা পুরু গ্রামের মানুষ জানান৷ নজরুল সুলতানা রাবেয়া তহমিনা এদের মতো ভালো মানুষ আমাদের এলাকায় খুব কম আছে। আমি নারী হয়ে বলতে পারি এরা সৎ চরিত্রবান মানুষ। তার সাথে জমি-জমার সিমানা নিয়ে দ্বন্দ্ব আপন দুই ভাইয়ের গায়ের জোরে ফিতা মিয়া, নজরুল ও সৎ মায়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত দন্দ্ব চলে আসছে। হয়তো সেই জেরে সম্পা বানু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ফিতা মিয়া স্ত্রীকে দিয়ে এই ঘটনা সাজিয়ে মামলা করেছে । একই অভিযোগ তোলেন ওই গ্রামের স্থানীয় নজরুল ইসলাম, সাফিয়া, বেদেনা বেগম, হাওয়া বেগমসহ এক শতাধিক মানুষ।

এদিকে মামলায় ৩ নং ও ৪ নং স্বাক্ষী জানান এই মামলায় যে আমাদের স্বাক্ষী বানিয়েছে তাতে আমাদের কোন অনুমতি নেয়নি এবং আমরা শ্রমিক হিসেবে তাদের বাড়িতে কাজ করেছি। তাদেন মধ্যে ইট রাখার জন্য কথা কাটা কাটি হয়েছে। এখানে মার ধর বা চুরি ছিনতাইয়ের কোন ঘটনা এখনে ঘটেনি মিথ্যা মামলার স্বাক্ষী দিতে আমরা কোথাও যাবো না৷
অপরদিকে মামলার ১ ও ২ নং স্বাক্ষী বাদির আপন ভাতিজি ও ভাতিজা। তাদের আনুমানিক বয়স ১২ থেকে ১৩ বছর। তারা এই মামলার স্বাক্ষী। এই দুই জন এখানকার বাসিন্দা নয়৷

মামলার ১ নং আসামী নজরুল ইসলাম জানান, আমি ঘটনার দিন দুপচাচিয়া ধাপের হাটে গরু ক্রয় করতে যাই। গরু নিয়ে আসতে সন্ধা হয়েছে। ফিতার অত্যাচারে নিজ জায়গা ছেড়ে দিয়েছি৷ ওই গৃহবধূ সম্পার দেবরের দাবি তার সৎ মায়ের বিরুদ্ধে আনা ভাবির এমন অভিযোগ সত্য নয়। প্রায় দুই বছর যাবত তাদের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে যে কারণে এমন মিথ্যা অভিযোগ। আমাকেও আমার মা’র নামে আদালতে মিথ্যা মামলা করেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনির প্রতি আমার দাবি সঠিক তদন্ত করে সত্যিটা বের করে আনা ৷

এ বিষয়ে মামলার বাদী ফিতা মিয়ার স্ত্রী সাম্পা বানু জানান, আমি কোর্টে মামলা করেছি, কোর্ট যে রায় দিবে মেনে নিবো পুলিশ এসেছিলো পুলিশ তদন্ত করেছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সম্পা বানু গত ২৪/১২ ২২০২২ দুপচাচিয়া সেন্ট্রাল ডায়গনষ্টিক এন্ড জেনারেল হসপিটালে আল্ট্রাসনো গ্রাম করেন। সেখানে প্রেগনেন্ট হওয়ার লক্ষণ রয়েছে। আঘাত পেয়ে দুপচাচিয়া ৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে ২৪/২৫ ডিসেম্বর ২০২২ দুই দিনের চিকিৎসা নিয়েছে৷ বিষয়টি নিশ্চিত করে দুপচাচিয়া হাসপাতের ইনচার্জ ডঃ মোঃ রেজানুল হক৷

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যন মশিউর রহমান সামীম জানান, অভিযুক্ত নজরুল ও তার মা অত্যন্ত ভালো মানুষ। আমার ইউনিয়নে দীর্ঘদিন বসবাস করছে। তার সাথে ফিতা মিয়ার সাথে জমি-জমা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে, সেজন্য তাকে মিথ্যা সাজানো হত্যা চেষ্টা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সামান্য জায়গা নিয়ে বিবাদ। আমি কয়েক বার ফিতা মিয়ার স্ত্রীদের বলেছি, এই টুকু জয়গা নিয়ে বিবাদ করা ঠিক হবে না । কারন তারা পরস্পপর সৎ ভাই৷ কিন্তু ফিতা মিয়া অসৎ উদ্দেশ্য স্ত্রীকে দিয়ে মামলা দায়ের করেছে৷ যা সম্পর্ণ রুপে মিথ্যা৷

মিথ্যা মামলা প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট রায়হান আলী বলেন ‘‘যারা মিথ্যা মামলার শিকার হবেন, তাদের প্রত্যেকের ক্ষতিপূরণের মামলা করা উচিত৷ এমনিতে ২১১ ফৌজদারি কার্যবিধিতে মামলা করা যাচ্ছেই, আমি সেটা বলছি না, আমি বলছি, তাদের প্রত্যেকের ক্ষতিপূরণের মামলা করা উচিত৷ কারণ, একটি মানুষকে যদি বিনা কারণে, বিনা অপরাধে জেল খাটানো হয়… যে অন্যায় বা মিথ্যা মামলা করে, তার কারণে কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তার উচিত হচ্ছে একটি দেওয়ানি মামলা করা৷ মানে, মানি স্যুট ফাইল করা৷ এটি তো প্রমাণ হওয়া খুব ইজি (সহজ) হবে৷’’

ক্ষেতলাল থনার এস আই মো. আঃ রহিম জানান, আদালত থেকে নজরুল সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত দিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে,মেডিকেল এমসি আসলে রিপোর্ট দিয়ে দিবো বলে ওসি বলেন।