পরিবেশ ও কৃষি জমি সুরক্ষা আইন অমান্য করে পটিয়ার রশিদবাদে কৃষি জমি ভরাটের অভিযোগ!
পটিয়া( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ- চট্টগ্রামের পটিয়ার রশিদাবাদ গ্রামে কৃষি জমি সুরক্ষা আইন ও পরিবেশ আইন অমান্য করে কৃষি জমি ভরাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কৃষি জমি ভরাট ও উপজেলার ১০/১২ টি স্পটে কৃষিজমির ভরাট ও জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে একাধিক চক্র। জমি হতে কেটে নেয়া মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার জায়গা, সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন মসজিদ ও কবরস্থান নামে বিভিন্ন কৃষি জমি ভরাট করে পাকা গৃহ নির্মাণ। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষিজমির মাটি কাটা এবং ভরাট করার দণ্ডনিয় অপরাধ। আইনে অপরাধ বলা হলেও ব্যবস্থা গ্রহণের বদলে অন্তরালে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে উঠেছে প্রভাবশালীর মহল।
এদিকে কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করায় ঘটনায় মৃত মোহাম্মদ আনোয়ার এর পুত্র মো: আশেক বাদী হয়ে ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার প্রতিপক্ষ আবদুল মোতালেব চৌধুরী, মুনসেফ আলী, রমিজ উদ্দিন, আরিফ হোসেন, রাশেদ ও শাহেদকে বিবাদী করে পটিয়া নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভুমি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এছাড়াও সিনিয়র জুডিসিয়ার ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সি.আর মামলা নং-১০/২০২৩ দায়ের করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩১ ডিসেম্বের। এ ঘটনার পর পর পটিয়া থানায় অভিযোগ দিলে কোন প্রতিকার না পাওয়ার বাদী আদালতের সরাপন্ন হয়।মামলা সূত্রে জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিপক্ষদের সাথে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৩১ ডিসেম্বর বাদীর বসতঘরের দক্ষিণ পাশের কৃষি জমিতে চাষাবাদ করার সময় বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বাদীর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ উপর অর্তকিত হামলা চালায়। এর কারণ জানতে চাইলে বিবাদীগন আমাকেও লোহার রড পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন এবং গলা চাপিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর করে হত্যার চেস্টা চালায়। এতে বিবাদীগন নগদ টাকা ও দুইটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় আমাদের শো-চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা এ ঘটনায় কোন মামলা মোকাদ্দমা করিলে প্রাণে মারা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আশেক জানান, বিবাদীদের প্রায় সময় আমাদের পরিবারবর্গকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি ও প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে। বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালতে অপর সি.আর. নং-৫২০/২২ মামলাটি বিজ্ঞ আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি চট্টগ্রামের দায়িত্ব দিয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত চলামান রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জানা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২-এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় নিধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপসয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু পটিয়ায় উপজেলায় গোপনে বিভিন্ন জায়গা কৃষি জমি ভরাট ও কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি সংঘবদ্ধ কুচক্রী মহল। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করার দাবি জানান সচেতন মহল।