সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল -|- ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
dailyamadernatunsangbad.com - news@dailyamadernatunsangbad.com - www.facebook.com/dailyamadernatunsangbad/

ইতিহাস,ঐতিহ্য আর কালের সাক্ষী বরিশাল দুর্গাসাগর দীঘি, টানছে পর্যটকদের!

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:

ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধশালী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা নদীমাতৃক জেলা বরিশাল।ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে এই জেলার অন্যতম ভ্রমণস্থান দুর্গাসাগর দীঘি।প্রতিদিন এ দীঘির সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসেন।

বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের বানারীপাড়া-বরিশাল সড়কের পাশেই এ দীঘির অবস্থান। বরিশাল শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার।

জানা যায়,স্থানীয় জনগণের পানি সঙ্কট নিরসনে ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন রাজা শিব নারায়ন তার স্ত্রী রানী দুর্গাবতীর নাম অনুসারে এই দীঘির নামকরণ করেন দুর্গাসাগর।

কথিত রয়েছে,রানী দূর্গাবতী একবারে যতদূর পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলেন ততদূর পর্যন্ত এ দীঘি খনন করা হয়।সেই আমলে এই দীঘি খননে ব্যয় হয় তিন লাখ টাকা।দিঘী খননে এক রাতে রানী প্রায় ৬১ কানি জমি হেঁটেছিলেন।

জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী,দীঘিটি ৪৫ একর ৪২ শতাংশ জমিতে অবস্থিত।এর ২৭ একর ৩৮ শতাংশ জলাশয় এবং ১৮ একর চার শতাংশ পাড়।দীঘির উত্তর-দক্ষিন পাড়ের দৈর্ঘ্য ১৪৯০ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে প্রশস্ত ১৩৬০ ফুট।দীঘির চারপাশ দিয়ে হাঁটার জন্য ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে।এছাড়াও দীঘিটির মূল সৌন্দর্য এর মাঝখানের ছোট্ট টিলাটি।যা এ দীঘির সৌন্দর্যকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে।

একটা সময় ছিল,শীত মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকতো পুরো দুর্গাসাগর এলাকা।তবে বর্তমানে পরিবেশ বিপর্যয় ও পাখি শিকারিদের উৎপাতে অতিথি পাখির তেমন একটা দেখা মিলে না।

দীঘির চারপাশে নারিকেল,সুপারি,শিশু,মেহগনি প্রভৃতি বৃক্ষ রোপন করে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।যা বর্তমানে দীঘিটির শোভা আরও বেশি বাড়িয়ে তুলেছে।এছাড়াও দীঘির দু’পাশে রয়েছে দুটি বিশালাকার শান বাঁধানো ঘাট।দীঘির চারপাশে বাঁধাই করা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ভ্রমণ পিপাসুরা উপভোগ করতে পারেন দীঘির মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য।

বর্তমানে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়নে দীঘির পশ্চিম পাড়ে ঘাট সংলগ্ন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো।ইচ্ছা করলে ভ্রমণকারীরা এখানে রাতও কাটাতে পারেন।

ভ্রমণ পিপাসুদের আকৃষ্ট করতে দিঘীর মধ্যে বাচ্চাদের জন্য ছোট্ট একটি শিশু পার্ক ও চিড়িয়াখানায় স্থাপন করেছে জেলা প্রশাসন।চিড়িয়াখানায় রয়েছে বেশ কয়েকটি হরিণ,বানর, ময়ূরসহ বেশকিছু জীবজন্তু।আগত পর্যটকদের বিনোদনের জন্য দিঘীতে নৌকার ব্যবস্থাও করেছে কর্তৃপক্ষ।ঘন্টা প্রতি দুই শ’ টাকার বিনিময়ে নৌকা নিয়ে পুরো দীঘি ঘুরে বেড়াতে পারেন ভ্রমন পিপাসুরা।দীঘিতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় রয়েছে সিসি ক্যামেরাও।