মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল -|- ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
dailyamadernatunsangbad.com - news@dailyamadernatunsangbad.com - www.facebook.com/dailyamadernatunsangbad/

বরিশালে স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অপরাধে ‘বন্ধুকে’ বাড়িতে ডেকে খুন!

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:

বরিশাল নগরের রূপাতলী এলাকার অপহৃত ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লার (৩৮) বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছেন র‌্যাব সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে নগরের বিমানবন্দর থানার ইছাকাঠি এলাকা থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।

শাহিন মোল্লার অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিন তরুণকে আটক করা হয়েছে।তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই লাশটি উদ্ধার করা হয়।আজ (৪ ফেব্রুয়ারি)
শনিবার দুপুর ১২ টায় সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান। র‌্যাব-৮ সদর দপ্তরে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

আটক তিন আসামিকে আজ দুপুরে বরিশাল কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।তাঁরা হলেন বরগুনার আমতলী উপজেলার কালিপুর গ্রামের ইউসুফ মোল্লা (২০), পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার গন্ডামারা গ্রামের মো. নাজমুল ইসলাম ওরফে অমি (১৯) ও বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সোনাহার গ্রামের হামিম শিকদার (১৯)। এঁদের মধ্যে ইউসুফ মোল্লা এ ঘটনার মূল হোতা।তাঁর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ায় শাহিন মোল্লাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে ডেকে এনে হত্যার পর লাশ গুম করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব। বয়সের ব্যবধান থাকলেও শাহিন ও ইউসুফের মধ্যে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্ক ছিল।

নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী শাহিন মোল্লা গত ২৭ জানুয়ারি নিখোঁজ হন।পরে তাঁর এক আত্মীয় এ ঘটনায় ৩০ জানুয়ারি বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।এরপর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে শাহিন মোল্লার পরিবারের কাছে ফোন আসে।শাহিনের বোন শিরিন আক্তার র‌্যাব-৮ বরিশাল সদর দপ্তরে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন।পরে র‌্যাব তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের শনাক্ত ও তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী লাশ উদ্ধার করে।

ইউসুফ মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,একই এলাকায় বসবাস করার সুবাদে শাহিন মোল্লা ও ইউসুফ মোল্লার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরে শাহিন মোল্লা ইউসুফের সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন।এতে ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।সেই অনুযায়ী ইউসুফ তাঁর দুই বন্ধু নাজমুল ইসলাম ও হামিম শিকদারকে সঙ্গে নেন।গত ২৭ জানুয়ারি রাতে শাহিন মোল্লাকে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ডেকে নিয়ে রুপাতলী কাঠালতলা তালুকদার হাউজিং প্রথম গলির নাহার ভিলার চতুর্থ তলায় ইউসুফের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। সেখানে সবাই মিলে শাহীনের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন।এরপর লাশ বস্তাবন্দী করে শৌচাগারেরর ফলস ছাদের ওপরে রেখে দরজা আঠা দিয়ে বন্ধ করে দেন।

র‌্যাব সাংবাদিকদের বলেন, ২ ফেব্রুয়ারি মুঠোফোনে শাহিনের পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চায় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টির তদন্তে নেমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে র‌্যাব।এরপর তিনজনকে গতকাল দিবাগত রাতে বাকেরগঞ্জ থেকে আটক করা হয়।পরে ওই রাতেই তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী র‌্যার-৮–এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (এডি) মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে অপহৃত ব্যবসায়ী শাহিনের লাশ বরিশাল নগরের বিমানবন্দর থানার ইছাকাটি এলাকা থেকে উদ্ধার হয়।