মোঃ জাবেদ আহমেদ জীবন, নবীনগর উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া প্রতিনিধি,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরে আলমের বিরুদ্ধে অসচ্ছল, বিধবা,তালাক প্রাপ্ত হতদরিদ্র মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। অসচ্ছল বিধবা,তালাক প্রাপ্ত হতদরিদ্র মহিলারা ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভি ডব্লই বি) কর্মসূচির আওতায় ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ড ভিত্তিক তালিকা করে ভিজিডি’র ৩০ কেজি চাউলের সাথে প্রতিজন উপকারভোগী সঞ্চয় ব্যবস্থাপনা আওতায় প্রতিমাসে একাউন্টে ২০০ টাকা করে ২৪ মাসে ৪৮০০ টাকা সঞ্চয় করেন। মেয়াদকাল শেষে উপকারভোগীগণ সঞ্চয়কৃত টাকা এককালীন পেয়ে থাকেন। এক কালিন সেই টাকা দিয়ে হতদরিদ্ররা ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়।
অনুসন্ধানী তথ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার পূর্বে ২০২০-২০২১ সনের ৮৯জন উপকারভোগী’র ১২ মাসের জমাকৃত ২ লক্ষ ১৩ হাজার ৭৫০ টাকা ইউপি সচিব ও ঐ চেয়ারম্যানের যৌথ একাউন্টে ব্যাংক এশিয়া নবীপুর শাখায় জমা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান নূরে আলমের মেয়াদ কালে ২০২১-২০২২ সনের ওইসব উপকারভোগীদের কোন টাকা ব্যাংক একউন্টে জমা হয়নি। অথচ উপকারভোগীদের উক্ত অর্থ সুষম বন্টনের দায়িত্বে থাকা এনজিও ‘আওয়ার ভীষন ফর অয়েলফেয়ার সার্ভিস’ এর তথ্য মতে ২১ টি ইউনিয়নের মধ্যে শুধু নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতিত সব কয়টি ইউনিয়নে সুষম বন্টন করা হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের হতদরিদ্র উপকারভোগীগণ বারবার ইউনিয়ন পরিষদ ওয়ার্ড সদস্য সহ চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়ে টাকা না পাওয়ায় তাদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এই টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা করছে।
এ ব্যপারে ওই ইউনিয়নের নরসিংহপুর গ্রামের হতদরিদ্র উপকারভোগী বকুল বেগম বলেন, দুই বছর মেয়াদে ভিজিডি চাউলের সাথে জমাকৃত সঞ্চয়ী’র ৪৮০০ টাকা পায়নি। চেয়ারম্যাান মেম্বাদের কাছে বার বার দ্বারস্থ হয়েও টাকা পাচ্ছি না ।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের ফতেহ্পুর গ্রামের হতদরিদ্র উপকারভোগী মমতাজ বেগম বলেন,আমাদের জমাকৃত টাকা পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে বার বার যোগাযোগ করেও টাকা পাওয়ার কোন হদিস পাচ্ছিা না ।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের লাপাং গ্রামের হতদরিদ্র উপকারভোগী ববি বেগম বলেন,আমরা চাউলের সাথে যে টাকা জমা করেছি সেই টাকা এখনো পায়নি।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও ২নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন,উপকারভোগীরা তাদের টাকা পাওয়ারা জন্য আমাদের কাছে আসছে,আমরা বিয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান এর সাথে কথা বললে চেযারম্যান কোন পাত্তাই দিচ্ছেন না। টাকাটা চেয়ারাম্যান আত্মসাৎ-এর চেষ্ঠা করছে।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ফিরোজ মিয়া বলেন, আমার সময়কালের সঞ্চয়কৃত টাকা পরিষদের নামে যৌথ একাউন্ট করে জমা রেখে দিয়েছি বর্তমান চেয়ারম্যন তার সময়ের এক বছরের টাকা জমা করে উপকারভোগীদের মাঝে বিতরন করবে এটা তার দায়িত্ব ।
এ ব্যাপারে এনজিও’র প্রতিনিধি অমর নাথ কুন্ড বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান সময় কালের টাকা জামা আছে, বর্তমান চেয়ারম্যানকে বার বার বলেছি তার সময়কালের টাকা একাউন্টের মাধ্যমে জমা করে উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করার জন্য, কিন্তু তিনি কোন সমন্বয় না করায় টাকা বিতরন করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে বর্তমান চেয়ারাম্যান নুরে আলম টাকা আত্মসাৎ বিষয়টি অস্বীকার করে তার সমকালের টাকা জমা করার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সাবেক চেয়ারম্যানের সময়কালের টাকা আমাদের কাছে হস্তান্তর হয়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। ওই টাকাটা পেলে উপকার ভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ত একরামুল ছিদ্দিক বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে