সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -|- ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল -|- ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
dailyamadernatunsangbad.com - news@dailyamadernatunsangbad.com - www.facebook.com/dailyamadernatunsangbad/

একটা পরিকল্পনা করেই জঙ্গী পলায়ন-দীর্ঘদিন ধরে ওই কান্ডটি ঘটেছে-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান!

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২

একটা পরিকল্পনা করেই জঙ্গী পলায়ন-দীর্ঘদিন ধরে ওই কান্ডটি ঘটেছে-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান!

গাজীপুর প্রতিনিধি:

পুলিশের হাত থেকে আসামি ছিনতাইয়ের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এটা অস্বীকার করার কিছুই নেই, তারা দীর্ঘদিন ধরে একটা পরিকল্পনা করেই ওই কান্ডটি ঘটেছে। যেখানে আমাদের দুর্বলতা ছিল। সেই দুর্বলতার ফাঁক ফোঁকর দিয়েই এরা বেরিয়ে গেছে। এ দুর্বলতাটা কে তৈরি করেছিল, কারা এজন্য দায়ী, কারা এই সুযোগ-সুবিধা ওভারলোক করেছে কিংবা কার গাফিলতি আছে, সেগুলোর জন্য দুটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। এই কমিটির প্রতিবেদন আমাদের কাছে এখনো পৌঁছেনি। তদন্ত রিপোর্ট আসলে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব। কারাগার থেকে আসামি স্থানান্তরের সময় তিনি কারা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের অধিকতর সতর্কতা আবলম্বন করেতে বলেন।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুর ১২ টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে ৬০তম কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্নকারী প্রশিক্ষনার্থীদের শপথ এবং কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন।

তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে জঙ্গিরা থাকে। এ জঙ্গিদের নিয়ে আপনারা যেমন উদ্বিগ্ন আমরাও তাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। এখানেও কারো কোন রকম গ্যাপ আছে কিনা তাও আমরা খতিয়ে দেখছি, আইজি প্রিজনও এ কারাগারে এসে পরিদর্শন করে খতিয়ে দেখছেন যে এখানকার কোন গ্যাপ আছে কিনা বা কোন গাফিলতি-দুর্বলতা আছে কিনা। এক্ষেত্রেও কারো যদি গাফিলতি দুর্বলতা পাওয়া যায় সে অনুযায়ী আমরা তাদের বিচারের আওতায় আনবো।প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে প্রথমে খোলা জীপে চড়ে প্যারেড গ্রাউন্ড কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। পরে নবীন কারারক্ষীদের শপথ গ্রহণ, মার্চ পাস্ট, কুচকাওয়াজ এবং আন আর্মড কম্ব্যাট ও পিটি ডিসপ্লে উপভোগ করেন। এসময় ঊর্ধ্বতন কারাকর্মকর্তা ছাড়াও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারে আটক বন্দিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশ ও বিদেশের শ্রম বাজারের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ৩৮টি কারাগারে ৩৯টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সকল কারাগারকে এ প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। কারাগারে বন্দিদের শ্রমে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর বিক্রয়লদ্ধ অর্থ হতে ৫০শতাংশ লভ্যাংশ বন্দিদের মজুরী হিসেবে প্রদান করা হচ্ছে। যা বন্দিরা পরিবারের নিকট প্রেরণ করতে পারছেন। কারাবন্দি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, জীবন মান উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাণার্থে বিভিন্ন মেয়াদী ৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং আরও কয়েকটি নতুন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কারাকর্মকর্তা-কর্মচারীদের শারীরিক উৎকর্ষ ও কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাজ চলমান রয়েছে যা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। এছাড়া ঢাকার কেরানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কারাগার থেকে আসামি স্থানান্তরের সময় অধিকতর সতর্কতা আবলম্বন করবেন। শৃঙ্খলা ও মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতিকে প্রতিরোধ করবেন। কারাভ্যন্তরে বিধি বহির্ভূত নিষিদ্ধ দ্রব্য প্রবেশ করতে না পারে সে দিকে আপনাদের সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
এদিন অনুষ্ঠানে নবীন কারারক্ষীদের মধ্য থেকে বেস্ট ড্রিলে-১ম প্রথম নরসিংদী জেলা কারাগারের রনি দেওয়ান, পিটিতে-১ম খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারের মোঃ রবিউল ইসলাম, বেস্ট ফায়ারারে ুমেহেরপুর জেলা কারাগারের মোঃ ইমানুর রহমান ও সর্ববিষয়ে চৌকষ ক্যাটাগরিতে মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের নবীন কারারক্ষী মিন্টু ঘোষকে কৃতি প্রশিক্ষণার্থীর পুরস্কার দেয়া হয়।

৬ মাস মেয়াদী এ প্রশিক্ষণ শুরু হয় এ বছরের ২৯ মে। এ কোর্সে ৩০১জন নবীন কারারক্ষী অংশ নেন।

এ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের (সুরক্ষা সেবা বিভাগের) সচিব মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী হোসেন, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিসুর রহমান, কারা উপ-মহাপরিদর্শক এ কে এম ফজলুল হক, জাহাঙ্গীর কবির, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা, কোর্সটির প্রধান প্রশিক্ষক ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার আমিরুল ইসলাম, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সুপার হালিমা খাতুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।