আজ ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মোঃ জাবেদ আহমেদ জীবন নবীনগর উপজেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
দেশের মানুষের, সরকারের এবং আমার নিজের পদ মর্যাদার ভাবমূর্তি নষ্ট হবে এমন কোনো কাজে আমি আপস করব না। যেকোনো কর্মস্থলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষগুলো ন্যায়-নীতি, সততা ও নিষ্ঠার সাথে সেবার ব্রত নিয়ে দায়িত্ব পালন করলে, ওই এলাকার উন্নয়ন হবেই হবে, ইনশাআল্লাহ। পাশাপাশি প্রশাসনের সাথে এলাকাবাসীকেও এগিয়ে আসতে হবে। কথাগুলো বলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) মাহমুদা জাহান। তিনি ৩৬তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বরিশাল জেলার ঝালকাঠি উপজেলায় সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগদানের মধ্যে দিয়ে চাকরি জীবন শুরু হয় করেন। ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবীনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই নবীন কর্মকর্তা নবীনগর উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই তার কর্মদক্ষতায় তিনি জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
জানাযায়, সাধারণ মানুষের কাছে ভূমি অফিসগুলো হচ্ছে দুর্নীতির আখড়া। যেখানে চেয়ার-টেবিল পর্যন্ত নাকি ঘুস খায়! ভূমি অফিসে সেবা নিতে যাওয়া সেবাগ্রহীতারা অনেক সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কিছু কিছু ইউনিয়ন ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয়না। আবার টাকা নিয়েও সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন উল্টো। মানুষের এ ধারনা পাল্টে দিতে মাহমুদা জাহান নবীনগরে যোগদানের পর থেকে গত কয়েক মাসে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শন করেছেন এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, ‘সেবাগ্রহীতাদের কোনো রকম হয়রানি করা যাবে না। তাৎক্ষণিক মানুষের সমস্যার সমাধান করে দিতে হবে। কারও বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেলে পরিণতি ভালো হবে না।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ওয়ারিশগনের নাম গোপন করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে অনেকে তাদের বোন ও সৎ ভাইদের বঞ্চিত করা ও বোনদের সম্পত্তি ভাইয়েরা লিখে নেওয়া কিংবা বোনের সম্মতি ছাড়াই সম্পতি বিক্রি করে দিচ্ছে। সেজন্য প্রকৃত ওয়ারিশ যাতে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে না পারে, সে কারনে নামজারি করার আগে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের সরেজমিন যাচাইপূর্বক প্রত্যয়ন দেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন মাহমুদা জাহান। সঠিক ওয়ারিশ সনদ না দিলে নাম জারির আবেদন তিনি বাতিল করে দিচ্ছেন। ফলে ওয়ারিশগন তাদের পৈত্তিক সম্পতির অংশ পাচ্ছেন নিয়মমাফিক।
এছাড়া,নবীনগর পৌরসভাসহ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে মাদকবিরোধী অভিযান, নৌ-যানে তদারকি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ এবং অবৈধভাবে ভেকু ও ড্রেজার দিয়ে কৃষি জমি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে জেল-জরিমান করছেন এই কর্মকর্তা। মাহমুদা জাহান তার দপ্তরকে উন্মুক্ত করে রেখেছেন। যে কেউ ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে তার সামনে হাজির হতে পারেন। সপ্তাহে দুই দিন সোম ও বুধবার শুনানির দিন নির্ধারিত থাকলেও অন্যান্য দিনগুলোতে ভুক্তভোগী সেবাগ্রহীতাদের সমস্যার কথা শুনেন, তাদের সমস্যা দ্রæত সমাধানেরও চেষ্টা করেন। ফলে সেবাগ্রহীতারা অল্প সময়ে ও সহজেই সেবা পাচ্ছেন।
স্থানীয়রা বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা চাইলেই যে একটা এলাকার চেহারা পাল্টে দিতে পারেন, অসহায় মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারেন, ন্যায়-নীতি, সততা ও আদর্শ মানুষ হিসেবে একজনকে মূল্যায়নের জন্য যথেষ্ট। এসিল্যান্ড ম্যাডামের কাছে কোনো কাজ নিয়ে গেলে খুব দ্রæত তা করে দেন। তিনি অনেক দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তার কর্ম দক্ষতায় বদলে যাচ্ছে নবীনগরের ভূমি অফিসগুলো। এমন এসিল্যান্ড পেয়ে আমরা উপজেলাবাসী গর্বিত।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) মাহমুদা জাহান বলেন, আমার কর্মের মুল্যায়ন করবে সেবা গ্রহীতারা। নবীনগর উপজেলাকে সুন্দরভাবে সাজাতে আমি সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।