আজ ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের আমতলা ভূমি অফিসের সাবেক নায়েব প্রশান্ত কুমার ও অফিস সহকারী মাসুদের ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে লাখ-লাখ টাকা আদায় করে লোপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা ভূমি অফিসের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম সরকারি জমি অবৈধ দখলে থাকা আমতলা বাজার থেকে উদ্ধার করা হয়। যে জমিতে অবৈধ দখল করে বিভিন্ন মার্কেট বহুতল ভবন নির্মান করে একটি চক্র দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসছিলো। ওই জমিতে সরকারি জমি উল্লেখ করে সাইনবোর্ড টানানো হয়। ফলে ওই এলাকার প্রভাবশালী মহল ওই জমি সরকারি ভাবে বন্ধবস্ত পেতে দৌড় ঝাপ শুরু করে। যে কারনে সুযোগ সন্ধানী স্থানীয় আমতলা ভূমি অফিসের তৎকালীন নায়েব প্রশান্ত কুমার ও অফিস সহকারী মাসুদ শুরু করেন ঘুষ বানিজ্য। যে কারনে সরকারি ওই জমি বন্ধবস্ত করে দেওয়ার অজুহাতে ১৮/ ২০ জনের কাছ থেকে ২০/২৫ হাজার টাকা করে আনুঃ ৫ লাখ টাকা আদায় করে লোপাট করেন ওই অসাধু নায়েব প্রশান্ত ও অফিস সহকারী মাসুদ। অনুসন্ধান সূত্রে আরো জানা গেছে, ভুক্তভোগী জমি বন্ধবস্ত পাওয়ার জন্য টাকা দেওয়া ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন জমি বন্ধবস্ত পেতে আমতলা ভূমি অফিসে ধর্ণাধরার পরেও তাদের জমি এখনো বন্ধবস্ত পায়নি। এবিষয়ে আমতলা বাজার ভূমি অফিসে কয়েকদফা সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। একপ্রকার তাদের জমি বন্ধবস্ত দেওয়ার কার্যক্রম চলমান আছে বলে সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে তৎকালীন নায়েব প্রশান্ত কুমার ও অফিস সহকারী মাসুদ যোগসাজশে জমি বন্ধবস্ত দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে গ্রহন করা প্রাই ৫ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে লোপাট করে ভাগবাটোয়ারা করে থেকে যায় বহালতবিয়তে। তার পরে নায়েব প্রশান্ত কুমার চাকরি থেকে অবসরে চলে যায়। বর্তমানে সেই অবসরে যাওয়া নায়েব উপজেলার চেঙ্গুটিয়া বাজারে তার নিজ বাড়িতে রয়েছে। অন্যদিকে অবৈধ ঘুষ গ্রহনকারী সহকারী মাসুদ বর্তমান আমতলা ভূমি অফিসে কর্মরত থেকে বহালতবিয়তে রয়েছে। জরুরি ভাবে দুর্নীতিবাজ সরকারি চাকরিরত অবস্থায় অবৈধ ভাবে ঘুষের টাকা গ্রহন করা ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করার দাবি করেছেন সচেতন মহল। এব্যাপারে আমতলা বাজার কমিটির সভাপতি সিরাজ মোল্লা জানান, দোকান ঘরের জমি বন্ধবস্ত দেওয়ার কথা বলে সকলের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছিলো, সেই টাকা জমি বন্ধবস্ত পেতে লেগেছে বলে ভূমি অফিসের অফিস সহকারী মাসুদ আমাদের জানিয়েছে। টাকা নিয়ে জমি বন্ধবস্ত না হওয়ায় আমরা অনেকবার আমতলা ভূমি অফিসে সালিশ দেনদরবার করেছি অবশেষে বন্ধবস্ত পাওয়ার একটা ব্যবস্থা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এবিষয়ে আমতলা ভূমি অফিসের অফিস সহকারী দুর্নীতিবাজ মোঃ মাসুদ মুঠোফোনে ঘুষের টাকা গ্রহনের কথা স্বীকার করে বলেন, ওইসময় যে নায়েব প্রশান্ত দায়িত্বে ছিলেন ওই আদায় করা টাকা তিনি নিয়েছেন,আমি সামান্য কর্মচারি আমি ওই টাকা গ্রহন করিনি। এবিষয়ে অবসরে যাওয়া সাবেক ওই নায়েব প্রশান্ত কুমার জমি বন্ধবস্তের টাকা গ্রহনের কথা অস্বীকার করে বলেন আমি কোন টাকা গ্রহন করিনি। এব্যাপারে আমতলা ভূমি অফিসের বর্তমান দায়িত্বে থাকা নায়েব মফিজ উদ্দিন বলেন, আমি আসার অনেক আগের ঘটনা আমি এবিষয়ে কিছু জানিনা। এবিষয়ে অভয়নগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, কেউ এব্যাপারে অভিযোগ করেনি অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।