আজ ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পাবনা সংবাদদাতা,
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিনের বাড়িতে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে ৩দিন অতিবাহিত হলেও ঘটনার জট ঘুলছে না। পাশের সিসিটিভি ফুটেজেও কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।
ঘটনাটিকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দিকে ইঙ্গিত করলেও তাদের চিহ্নিত করতে পারেননি আলাউদ্দিন। হামলার সময় ও পরে আলাউদ্দিন এবং তার পরিবারের সদস্যরা কাউকে সরাসরি দেখতেও পারেননি। আশপাশের লোকজনও কাউকে দেখতে পারেননি। এনিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য ও নানা গুঞ্জন।
আলাউদ্দিনের দাবি- ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১টার মিনিটের দিকে একদল দুর্বৃত্তরা নন্দনপুরের সিদ্ধিনগর গ্রামে তার বসতবাড়িতে হামলা করে। দুর্বৃৃত্তরা তার একটি টিনের ঘরে কোপানো শুরু করে। এসময় তাকে উদ্দেশ্যে করে ‘শালা বেশি বেড়েছে, শালা রিফিউজি’ ইত্যাদি বলে গালিগালাজ করে। পরে বাড়ির ক্যাচি গেটের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের লোকজন ও আশপাশে লোক এগিয়ে আসলেও কাউকে দেখতে পাওয়া যায়নি।
আলাউদ্দিনের পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় একটি জমির কেনার টাকা নিয়ে বাবার চাচাতো ভাই আব্দুর রহিম সঙ্গে আলাউদ্দিনের বিরোধ ছিল। একজনকে জমির দখল বুঝিয়ে দিতে চল্লিশ হাজার টাকা উৎকচ নেয় আলাউদ্দিন ।এনিয়ে ঘটনার দিন ১৮ জানুয়ারি (বুধবার) বিকেলে পাশের গনেশপুর বাজারে দোকানে বসে থাকা অবস্থায় চাচা আবদুর রহিমকে মারধর করে। পরে চাচা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু করেন ।এঘটনায় থানা পুলিশ তৎপরতা শুরু করার কয়েক ঘণ্টার মাথায় অভিযুক্ত আলাউদ্দিনের বাড়িতে রহস্যজনক এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমার সাথে আমার ওই চাচার একটু ঝামেলা হয়েছিল কিন্তু সেটা আমরা মিটমাট করে নিয়েছি। এখন কে এই ঘটনা ঘটালো নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে কিছুদিন আগে জামায়াত-শিবিরের পোস্টার লাগানো নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। তারা হয়তো এ ঘটনা ঘটাতেও পারে। এছাড়া আমার সাথে কারো বিরোধ নেই।’
চাচাকে মারধরের ঘটনা ধামাচাপা ও আইনানুগ ব্যবস্থা থেকে বাঁচতে নিজেই এঘটনা ঘটিয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে এই যুবলীগ নেতা বলেন, ‘না, এই অভিযোগ সত্য নয়। চাচার সঙ্গে আমার ঝামেলা সমাধান হয়ে গেছে। কেউ কি নিজের ক্ষতি নিজে করে? আমি কিভাবে আমার নিজের ক্ষতি করবো?’
এ বিষয়ে আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমি শুধু পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কোনও অভিযোগ বা মামলা দেয়া হয়নি। কিন্তু আমার সাথে ঝামেলার কয়েক ঘন্টার পর রাতে আলাউদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। সকালে যখন পুলিশ আমার কাছে আসে তখন তাদের আমি জানিয়েছি যে- তার বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ নেই কিন্তু মধ্যরাতে তার বাড়িতে কারা কিভাবে এই ঘটনা ঘটালো সেটা দ্রুত বের করতে পুলিশের কাছে অনুরোধ করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জৈনিক ব্যক্তি জানান এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহীন মাঝে মধ্যেই তার লোকজন দিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষদেরকে মারধর ও চাঁদাবাজি করতে সহায়তা করে আসছে, যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চলা এই আলাউদ্দিন শাহিনের অন্যতম ক্যাডার ।
ঘটনা নিয়ে আরও তদন্তের কথা জানালেন সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এই ঘটনার কোনো রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। আমরা পাশের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তারপরও আমরা তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। আর তার চাচার সঙ্গের ঝামেলা সমাধান হয়ে গেছে।
কামরুল ইসলাম
পাবনা
২২/০১/২০২৩