আজ ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মোঃ নজরুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি,
আধ্যাত্মিক সাধক গাজী কালু’র স্মৃতি বিজড়িত যশোরের একসময়ের ঐতিহ্যবাহী হরিহরনদী দখলবাজ ভূমিদস্যুদের কবলে পড়েছে। অস্তিত্ব সংকটে পড়া এই নদীটি যখন সরকারি উদ্যোগে পুনরুদ্ধার ও রক্ষণাবেক্ষণের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ঠিক তখনই প্রভাবশালী এক শ্রেণির ভূমিদস্যু নদীর জমি দখলে মরিয়া হয়ে পড়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ, অতি সম্প্রতি ঝিকরগাছার চন্দ্রপুর-মির্জাপুর গ্রামের ধরার ঘাটস্থ গাজী পীরের ধাম ও শ্মশানঘাট এলাকা থেকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) সাইনবোর্ড রাতারাতি উধাও করে দিয়েছে ভূমিদস্যুরা। সেখানে রাতারাতি ‘ইচ্ছা এগ্রো ফ্যামিলি পার্ক’ এর নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ফলে, তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ প্রকাশ ও বিস্মিত হয়েছে এলাকার সচেতন মানুষ। তারা নদীর অবৈধ ও বেআইনি দখল উচ্ছেদ এবং বালু উত্তোলন বন্ধে একাট্টা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিকার দাবি করে এলাকাবাসী ভূমি মন্ত্রণালয় সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে গত ২ফেব্রুয়ারি মোঃ আল রুহান প্রিন্স (পাইলট) স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, হরিহর নদীর খাস খতিয়ান ভুক্ত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি পর্যায়ক্রমে দখল হয়ে গেছে। এখনও অবৈধ দখল অব্যাহত আছে।নদীর বিভিন্ন স্থানে ভেড়িবাধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। নদীর স্রোত বন্ধ করায় পানি দূষিত হচ্ছে। দখলকারী ভূমিদস্যুরা নদীর জমি দখল করে পুকুর, ঘের, জলাশয় তৈরি করে মৎস্যচাষ ও কৃষি কাজে ব্যবহার করে চলেছে। সিএস খতিয়ান অনুযায়ী সুস্পষ্টভাবে নদীর খাসজমি স্থানীয় ভূমি অফিসের অধস্তন কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে বিভিন্ন ব্যক্তি জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নিজনামে রেকর্ড করতঃ দলিল প্রস্তুত, নামপত্তন, খাজনা-দাখিলা প্রস্তুত করেছে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে লিখিত এই আবেদনপত্রে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন মৌজার খাস খতিয়ানভুক্ত হরিহর নদীর জমি ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের জেএল নং ৫৯মির্জাপুর, ৬০দোস্তপুর, ৬১বেড়েলা মৌজাসহ যশোর সদরের চাঁচড়া ইউনিয়নের কল্যাণদাহ মৌজা,
মনিরামপুর উপজেলার এড়েন্দা মৌজায় হরিহর নদী বাংলাদেশ সরকারের ১নং খতিয়ানে অর্ন্তভূক্ত আছে। উল্লেখিত দাগের সরকারি হরিহর নদীর জমি নানা অপকৌশলের পাশাপাশি প্রভাব খাঁটিয়ে ব্যক্তি নামে রেকর্ড ভুক্ত করা হয়েছে এবং অবৈধ ভোগ দখলকারীরা নদী খনন কাজে বাঁধা দিচ্ছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগের অনুলিপি ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, যশোরের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব), নির্বাহী প্রকৌশলী (বাপাউবো) যশোরকে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৯ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখে যশোরের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর কে. এম. আবু নওশাদ সাক্ষরিত এতদসংক্রান্তে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দানের নির্দেশনা দিয়েছেন যশোর সদর ও ঝিকরগাছা উপজেলার সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মোবাইল ০১৭১২৯৪৭৮৭১