আজ ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁর মান্দায় গভীর নলকূপ নিয়ে বিরোধের জেরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৩ জনকে গুরতর আহত করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন।ঘটনাটি ঘটেছে মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউ’পির গোবিন্দপুর গ্রামের (শাহানাপাড়ায়)।
আহতরা হলেন, জাহাঙ্গীর আলম,তরণ এবং আবুল হোসেন।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেন ।
এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমের শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা জানান , গোবিন্দপুর (শাহানাপাড়া) গ্রামের প্রতিপক্ষ রেজাউল ইসলাম ওরফে এজ্জুল,মোস্তাফিজুর রহমান পারাভেজ এবং পারুল বেগম গংদের সঙ্গে একটি গভীর নলকূপ ও পারিবারিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।
এরই জের ধরে সম্প্রতি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা। পরবর্তীতে ওইসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশকিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ” মান্দার গোবিন্দপুর শাহানা পাড়ার গভীর নলকূপের অপারেটর পরিবর্তনের দাবি” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর কৃষকদের স্বার্থে ওই এলাকার স্থানীয় কিছু লোকজনের উদ্যোগে গোবিন্দপুর গ্রামের শাহানাপাড়ায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি “মান্দায় গভীর নলকূপের অপারেটর পরিবর্তনের দাবিতে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। ওই দিন মানববন্ধনের সংবাদ সংগ্রহে যান স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী। সেখানে যাওয়ার পর মানববন্ধন শেষে ফেরার পথে তারা জানতে পারেন যে ওই এলাকার এক প্রভাবশালী ভূমিহীনের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসি! এরপর বিষয়টি জানার সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য তারা ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসির ছবি তুলতে যান। অথচ সেখান থেকে ফেরার পর তারা জানতে পারেন যে, দুইজন সংবাদকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মান্দা থানায় একটি মিথ্যা,বানোয়াট এবং ভিত্তহীন মনগড়া লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভূমিহীন পরিবারের কথিত নামধারী হলুদ সোম্বাদিক পারভেজ। এতেও সে ক্ষান্ত হয়নি,ওই মিথ্যা,বানোয়াট এবং ভিত্তহীন অভিযোগের কপি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকার কয়েকজন কথিত নামধারী
হলুদ সোম্বাদিকের প্ররোচনায় অতি উৎসাহী দিয়ে দু’জন পেশাদার সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে ” মান্দায় সাংবাদিক পরিচয়ে অনধিকার প্রবেশ করে তালা ভেঙ্গে ছবি তোলার অভিযোগ” শিরোনামে ওই দুইজন সংবাদকর্মীর নাম এবং ছবি ব্যাবহার করে মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করিয়ে নেয়। বিষয়টি জানার পর ওই দুইজন সংবাদকর্মী আবার ভূমিহীন পরিবারের কথিত নামধারী হলুদ সোম্বাদিক(দেশরুপান্তর পত্রিকার) পারভেজের বিরুদ্ধেও আলাদা আলাদা অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের কাউন্টার অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই ফজলে এলাহি তদন্ত করে বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
অপরদিকে, বয়স্কভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা। ওইসব অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ” মান্দায় বয়স্কভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ শিরোনামে” নিউজ প্রকাশিত হয়। এরপর টনক নড়ে উপজেলা প্রশাসনের। বর্তমানে সেগুলো অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লোকজন। কিন্তু এতোকিছুর পরেও কোন প্রতিকার না পাওয়াই স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলা প্রশাসনের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণে অত্র এলাকাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেননা বিভিন্ন দপ্তরে এতোগুলা অভিযোগ দায়ের করার পরেও কোন সুফল পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। তাদের দাবি যে, এতো অভিযোগ দায়ের করার পরেও পারভেজের কিছুই করা যাচ্ছে না। ওর খঁটির জোর কোথায়?
এমপির নাতী পরিচয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিয়মিত এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
কারণ ওই বিবাদমান গভীর নলকূপের সেচ পরিচালনা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করার পরেও গায়ের জোরে পারভেজেরা ওই ডিব টিউবওয়েলের সেচ কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। আর যারা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য দিয়েছেন তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে হয়রানি করা হচ্ছে। ভূমিহীন পরিবারের কথিত নামধারী হলুদ সোম্বাদিক পারভেজের পরিবারের লোকজনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাদের বিষয় কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না, বছরের পর বছর এসব অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ধরনের অব্যহত হুমকি-ধামকি নিরবে সহ্য করে আসছেন তারা। এসব বিড়ম্বনা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান ভুক্তভোগীরা।
একই কায়দায় পূর্বপকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গতকালকেও সঙ্গবদ্ধভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ছিলো তারা।
মূলত ওইসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে
আবারো গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েকজন সংবাদকর্মী
ওইসব বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গোবিন্দপুর গ্রামে গেলে আশ্রয়ণের প্রকল্পের ঘরে এসি দেখতে পান এবং স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে বাড়ির বাহির থেকে এসির ছবি তোলার চেষ্টা করেন। এরই এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের পারভেজ, রেজাউল ইসলাম,জাহিদুর রহমান,রানা,রশিদুল ইসলাম,
নাফিজ,পারুল,মাহমুদা,পাপিয়া,নাসিমা, শরিফুল,আব্দুস সালাম এবং
শিরিনাসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী লোকজন ভুক্তভোগী আহতদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়।
এতে গোবিন্দপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ,তরণ এবং আবুল মারাত্মকভাবে আহত হন।
এ বিষয়ে ভূক্তভোগীরা জানান, বর্তমানেও প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে খুন-জখম এবং গুম করার হুমকি অব্যাহত রাখায় তারা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।
এমতাবস্থায় এ জঘন্যতম ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি ।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-এ আলম সিদ্দিকী বিপিএম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।