আজ ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মাগুরা জেলা প্রতিনিধি,
মোঃ সাকিব খান,
মাগুরার মাঠে মাঠে এখন সরিষার ফুলে ভরে গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি মাঠে সরিষা ফুল বাতাসে দোল খাচ্ছে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে সরিষা ফুল হাসছে এবং হলুদের গালিচা বিছিয়ে রেখেছে কেউ। হলুদ ফুলের এ দোলা দেখতে এখন দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা মাঠে ভিড় করছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষার উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছর এবার জেলায় সরিষা চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৩৫৫ হেক্টর। এর মধ্যে সদরে ৮ হাজার ১৬০ হেক্টর, শ্রীপুরে ৯১০ হেক্টর, শালিখায় ৫ হাজার ১০ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ২ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর।
মাগুরা সদরের ছয়চার গ্রামের সরিষা চাষী শফিুকুল জানান, আমি বরাবরই সরিষা চাষ করি। গত বছর সরিষা চাষে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। এবার ৪০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষা ভালো হয়েছে। আশারাখি এবারও গতবারের মতো ভালো ফলন পাব।
সদরের শ্রীরামপুর গ্রামের চাষী জিল্লুর রহমান বলেন, মাগুরা বারো মাসি ফসল উৎপাদন করি। এ ফসল গুলোর মধ্যে সরিষা অন্যতম। ধানের পরেই আমি এবার ৩৫ শতক জমিতে এ চাষ করেছি। সরিষা চাষে পরিচর্যা কম লাগে শুধু নিয়মিত দেখাশুনা আর ঠিকমতো ঔষধ ছিটিয়ে কাজ করতে হয়। ফলন ভালো হতে হলে কৃষি বিভাগের মাঠ পরিদর্শকদের পরামর্শ দরকার। আমি নিয়মিত তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে কাজ করছি।
শালিখা উপজেলার বাউলিয়া গ্রামের সরিষা চাষী কার্তিক রায় জানান, আমি প্রতি বছর সরিষা চাষ করে আসছি। এ চাষে পরিশ্রম কম ফলনও ভালো। সার ও ঔষধ নিয়মিত সময়ে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আমি এবার ৩০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি। এবার আমার সরিষা ভালো হয়েছে। এখন গাছে গাছে ফুল এসেছে। আর কিছুদিনের মধ্যে ছোট ছোট গুটি গুটি সরিষা দানায় পরিণত হবে। সরিষা ফুলের অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে ইতিমধ্যে আমার ক্ষেতে সকাল বিকাল মানুষের ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, চলতি বছর আবহাওয়া ও পরিবেশ ভালো থাকায় জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা উৎপাদন হয়েছে। এবার বারি-১৪,৯ বিনা-৯,১০,১১ জাতের সরিষা বেশি চাষ হয়েছে।
এছাড়া সরিষা চাষে জেলার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া নিয়মিত কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, মাঠকর্মী, ও মাঠ পরিদর্শকরা এ চাষকে আরো উন্নত ও ফলন বাড়াতে তৃণমূল কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। এবার সরিষার বাম্পার ফলন ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা করেন এই কর্মকর্তা।