আজ ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আহসান হাবীব স্টাফ রিপোর্টারঃ-
নাম জিসান। বয়স নয় কি দশ। মলিন মুখখানির দিকে তাকালে যে কারও মায়া লাগতে পারে। যে বয়সে হাতে স্কুলবই থাকার কথা, বন্ধুদের সঙ্গে দাপিয়ে বেড়ানোর কথা, খেলাধুলা করার কথা, সে বয়সে কাঁধে তার সংসারের ভার। পেটের তাড়নায় অটোরিকশা নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। বন্ধুদের চোখ এড়িয়ে তাকে চালাতে হয় অটোরিকশা। জিসান নামের এই শিশুটির জীবনের গল্প এমনই করুণ।
নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের উত্তর কচ্ছপিয়া গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান জিসান।পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে স্কুলে যাওয়া হয়নি জিসানের।
জিসানের অটোরিকশায় চড়তে গিয়েই তার সঙ্গে পরিচয় ও কথা। ধূলিজীর্ণ শুষ্ক চোখেমুখে কী এক অদ্ভূত মায়া লেগে আছে। জিসান বলে, আগে স্কুলে যাইতাম, এখন যাই না। বাবা অসুস্থ, কামাই করতে পারেন না, ভারী কাজও করতে পারেন না। ভারী কাজ করতে গেলে আব্বা হাফাইয়া ওঠেন। তার সপ্তাহে আটশত টাকার ওষুধ লাগে। তাই আমি গাড়ি চালাই। সারাদিন রিকশা চালাইয়া যা উপার্জন করি, তা দিয়া বাবার ওষুধ এবং সংসার চালাই।
তবে জিসানেরও মন চায় আর দশজন বন্ধুর মতো সকাল-বিকেল বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে ছুড়ে বেড়াতে। হইহুল্লোড় করতে। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তার বড়ই প্রতিকূল। সে জানায়, তারও প্রতিদিন স্কুলে যেতে মন চায়, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। কিন্তু দিনশেষে বাড়িতে খাবার নিয়ে ফিরতে হবে, এই ভাবনাও থাকে তার। একদিন কামাই না করলে বাবার ওষুধ কেনা হবে না। তাই মনের কথা সে মনেই সুপ্ত থাকে। তবে সুযোগ পেলে সেও পড়ালেখায় মনোযোগী হতে চায়।