আজ ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিয়ত রাস্তায় অসুস্থ পশু পাখির সেবা করে যাচ্ছেন ঝালকাঠির পশুপ্রেমী খ্যাত মুন!
মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
ভালোবাসার সংজ্ঞা একেক জনের কাছে একেক রকম। আজ আপনাদের যে ভালোবাসার গল্প শুনাবো সেটা একটু অন্যরকম।এটা মা-বাবা,প্রেমিক, বন্ধু,আত্মীয়দের প্রতি ভালোবাসা নয়। এ ভালোবাসা অবলা প্রাণিদের জন্য।
বলছি ঝালকাঠি সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শাহানাজ মুনের কথা।তিনি শহরের নতুন কলাবাগান এলাকার মো. মহসিন আলমের মেয়ে।মানবিক কাজের জন্য কয়েকটি সম্মাননা স্মারকও পেয়েছেন তিনি।আশপাশের সবার কাছে প্রাণিপ্রেমী হিসেবে পরিচিত শাহানাজ।টিউশনি করে উপার্জিত টাকা তিনি প্রাণিদের সেবায় খরচ করেন।
ঝালকাঠিতে যখনই কেউ কোনো কুকুর-বিড়ালকে অসুস্থ বা আহত অবস্থায় দেখেন সবাই তাকে ফোন করেন।শত ব্যস্ততার মাঝেও তাদের উদ্ধার করেন তিনি।এরই মধ্যে তিনি বিভিন্ন বয়সী ডজন খানেক বিড়ালকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করে অবমুক্ত করেছেন।
এইতো কিছুদিন আগের ঘটনা।শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় কোমর ও পিছনের দুই পা ভাঙা একটি কুকুর হামাগুড়ি দিয়ে চলছিল।এটা দেখে রুটি কিনে নিজ হাতে কুকুরকে খাওয়ান।পরে কুকুরটিকে রিকশায় করে শহরের সিটি পার্কে নিয়ে যান।স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিটি পার্কের ইজারাদার হুমায়ুন কবীর সাগরের কাছে অনুমতি নিয়ে অসুস্থ কুকুরটিকে সেখানে রাখেন।প্রতিদিন ৩/৪বেলা খাবার ও সেবা দিয়ে যান মুন।শুধু তাই নয়, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সেবা শুরু করেন তিনি|কুকুরটি এখন অনেকটাই সুস্থ।
প্রাণিদের প্রতি এমন ভালোবাসার ব্যপারে জানতে চাইলে মুন জানান তার নানান অভিজ্ঞতার কথা।ছোটবেলায় ‘জীবে প্রেম করে যেই জন,সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’গল্প পড়েই শিখেছেন কীভাবে প্রাণিদের ভালোবাসতে হয়।এনিয়ে অনেকের কাছ থেকে অনেক বাজে মন্তব্য শুনেছেন তিনি। কিন্তু কখনো কারোর কথায় কান দেননি।
মুন বলেন, কে কি করলো বা বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কারণ পশুরও তো প্রাণ আছে। ওদের কারণেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে। প্রাণিকে ভালোবাসলে মানুষ উগ্র হবে না, অপরাধী হবে না। প্রাণিপ্রেম মানুষকে উদার করে।
তিনি আফসোস করে বলেন, কুকুর-বিড়ালকে একটু সহযোগিতার মানসিকতা খুব কম মানুষের আছে। উল্টো পারলে লাথি দেবে। লাঠি দিয়ে আঘাত করবে। মানুষ খাবার নষ্ট করে তবুও কুকুর বিড়ালকে দেয় না।