আজ ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মোঃ রিয়াজুল ইসলাম(আলম)সাতক্ষীরা,দেবহাটা
সিয়াম সাধনার মাস রমজান। মহান আল্লাহ মালিকের নৈকট্য লাভের জন্য সমস্ত মুসলিম জাতি রমজান মাসে বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থাকেন। রমজান মানে হলো সকল পাপ, অনাচার, মনের কলুষিত ভাবসহ সকল খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পবিত্র এই মাসে সকল মুসলিমদেরকে ভালভাবে রোজা পালনের জন্য প্রত্যেক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর প্রতিযোগীতা হয়, সেখানে আমাদের দেশে রমজান মাসকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের প্রতিযোগীতায় নামেন। রমজানের শুরুতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যে লাগামছাড়া পর্যায়ে গিয়েছে তাতে সাধারন মানুষের দুবেলা দুমুঠো খেয়ে রোজা রেখে বেচে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। রমজান মাসকে নিয়ে কলা, পাটালী, গুড়, খেজুর, তরমুজ, শসা, খিরাই, ছোলা, মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের হাত উঠেছে মাথায়। সংসার নির্বাহ নিয়ে মানুষের কপালে পড়ছে চিন্তার ভাজ।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ টাকার চাঁপাকলা ৮০টাকা, ৩০টাকার সাগরকলা ৬০টাকা, ২০টাকার তরমুজ ৩৩/৪০টাকা, ১২০টাকার আখের গুড় ১৬০ টাকা, ১২০টাকার পাটালী ১৪০টাকা, ৭০টাকার ছোলা ৮৫টাকা, ৪০টাকার দুধ ৫০টাকা, ৩০টাকার শসা ৬০টাকা, ২৫টাকার খিরাই ৫০টাকা, ৬৫০ টাকার গরুর মাংস ৭০০টাকা, ৩০০টাকার কাটা পোল্ট্রি ৩২০টাকা, ১১০০টাকার খাসির মাংস ১২০০টাকা, খেজুর ৩০০ থেকে ২০০০টাকা, বেগুন ৬০টাকা, পটল ৬০টাকা, আলু ২২টাকা, পেয়াজ ৪০টাকা, রসুন ১০০টাকা, কাচাঝাল ৮০টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। মাছের বাজার দৈনিক উঠানামা করছে। চিংড়ি মাছ সাড়ে ৬শত থেকে ৭শত আর বাগদা শ্রেনী ভেদে ৮০০ থেকে বিভিন্ন দামে বিক্রয় হচ্ছে।বাজারের দোকানে বিক্রয় তালিকা নেই। দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া, পারুলিয়া, সখিপুর, গাজীরহাট বা উপজেলা সদরের বাজার তদরকী করা হচ্ছেনা। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে, রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে। দিনমজুররা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। কৃষক পরিবারে কর্তাদের হাতে নগদ টাকা নেই। অভাব অনটনের মধ্যে রোজাদার দিন কাটাচ্ছে। দিন মজুররা বেকার হয়ে পড়েছে। ইরি বোরো ধানের চায আবাদে মোটা অংকের টাকা ব্যয় করার কারণে অনেকের এখন হস্ত মজুদ শূন্য। এমন পরিস্থিতিতে বাজার তদারকি টিমের দেখা পাচ্ছে না ক্রেতারা। ফলে মধ্যসত্বভোগি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা ফুলে ফেপে বাজার দাপাচ্ছে। সাধারণ ক্রেতারা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কেউ কি আছেন বাজার মনিটরিং করার দায়িত্বে? যদি কেউ এ দায়িত্বে থেকে থাকেন তাহলে সাড়া দিবেন কী? দাবি ক্রেতাদের। এবিষয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীরমজানের শুরুতে, মসজিদে নামাযের সময় ও বিভিন্ন স্থানে, সাধারন মানুষ ও বিক্রেতাদের নিত্যপন্যের মূল্য, রমজানে যাতে কেউ না বাড়াতে পারে সেজন্য সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন বাজারে তদারকির মাধ্যমে যদি কেউ বেশি দামে মালামাল বিক্রয় করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান।কিন্তু চোর কি মানে ধর্মের কাহিনী। বাজার মনিটরিং এর অভাবে, দেবহাটা উপজেলার প্রত্যেকটি বাজারের ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত দাম বাড়িয়ে চলেছে। প্রত্যেকটি বাজারের বাজার কমিটি, নীরব ভূমিকা পালন করছে। ব্যবসায়ীদের সাথে তাদেরও যোগসাজক আছে দাম বাড়ানোর এ দাবী ক্রেতাদের ।যারা এই নিত্য পণ্যের দাম বাড়ানোর পিছনে রয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেছেন সর্বসাধারণ।