আজ ৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মো: ফখরুদ্দিন মোবারক শাহ (রিপন),নোয়াখালী সংবাদদাতা :-
নোয়াখালীর সেনবাগের ৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার ১০ টি সরকারি খাল দীর্ঘদিন ধরে এক শ্রেণির প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে পড়ে রয়েছে। খালের ওপর ঘরবাড়ি, দোকানপাট নির্মাণ, বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি ও বর্জ্য ফেলার কারণে খালের প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। যার ফলে সেনবাগ উপজেলার প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, অতিবৃষ্টিতে ১ হাজার ১০ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ টির বেশি লেয়ার মোরগের খামার এবং অসংখ্য ব্রয়লার খামার। অনেক খামারি লোকসানে মুরগী বিক্রি বা ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেনবাগের হাজনী, কাজীরহাট, শেখ সুফি, বদুগাজী, কানকিরহাট, ছাতারপাইয়া, মইশাই, তেমুহনী, চৌমুহনী, ছিলোনিয়া, গাজীহাট, চন্দেরহাট, সাহেবেরহাট, সাতবাড়িয়া, জিরুয়া ও শ্রীপুর সহ অন্তত পক্ষে ১০ টি খাল প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। এসব খাল এক সময় মেঘনা নদী ও ছোট ফেনী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল, যেখানে বড় নৌকা ও স্বাম্পান চলাচল করত। এখন খালগুলোতে বাঁধ, ভরাট ও বর্জ্যের স্তূপ জমে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আজিজপুর গ্রামের আল মগীর হোসেন খোকন জানান, ফেনী–নোয়াখালী চারলেন সড়কের কাজের সময় অনেক জায়গায় খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। এছাড়া বাজারে বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় ব্যবসায়ীরা খালে ময়লা ফেলায় কচুরিপানা ও আগাছায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
মোহাম্মদপুর গ্রামের জাকের হোসেন জানান, সেবার হাট বাজারের কাছে ফেনী– নোয়াখালী খালের ওপর ভবন নির্মাণ করে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে, যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ।
সেনবাগ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান সফি বলেন, পানিবন্দি হয়ে অন্তত ২০টি লেয়ার খামারের মালিকরা লোকসানে মুরগী বিক্রি করেছেন এবং ব্রয়লার খামারে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে।
সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, দখলদার ও জোর জবরদখল কারীদের তালিকা তৈরি হয়েছে, শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে খালগুলো দখলমুক্ত করা হবে।
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল সংস্কার এবং শুষ্ক মৌসুমে খাল খনন করে প্রাকৃতিক পানি প্রবাহ পুনরুদ্ধার করতে হবে, না হলে কৃষি ও জীবিকায় ভয়াবহ সংকট দেখা দিতে ।